বিশ্বের দামি ঔষধি শিকড়!

আদি যুগে গাছপালার মাধ্যমেই মানুষের রোগের চিকিৎসা করা হতো। ৫০০০ বছরের পুরাতন চিকিৎসাক্ষেত্র হচ্ছে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা।

অর্থাৎ ভেষজ বা উদ্ভিদের ওপর পুরো চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করা। ঠিক তেমনি বিশ্বের অন্যতম দামি একটি ঔষধি মানা হয় ‘জিনসেংয়ের শিকড়কে’। প্রায় হাজার বছর ধরে চীন ও কোরিয়ার আয়ুর্বেদিক ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে শিকড়টিকে। ঝোপঝাড়ে জন্মানো শেকড়টির দাম সবচেয়ে বেশি। জিনসেংয়ের শিকড়ের জন্য খরচ করতে হয় ১৭ হাজার ডলার, আনুমানিক প্রায় ১৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার সমান।

জিনসেং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি-কাশি, ফ্লুসহ বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধে সহায়ক। পুষ্টিবিদ কেরি গ্যান্সের গবেষণায়, সংক্রামক রোগ-বালাইয়ে বিরুদ্ধে জিনসেংয়ের শিকড়েরর নির্যাস অত্যন্ত কার্যকর।

২০২০ সালে মানুষের শরীরে জিনসেংয়ের প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাও চালানো হয়েছিল। সেখানে উঠে আসে প্রতিদিন জিনসেংয়ের নির্যাসসমৃদ্ধ বড়ি যে কোনো সর্দি-কাশির ক্যাপসুল থেকে বেশি কার্যকর।

এবং প্রায় ৫০ শতাংশ কম ঠান্ডাজ্বর বা সংক্রামক ফ্লু হওয়ার মাত্রা হ্রাস করে। তাছাড়া জিনসেং সেবনে অসুস্থতা থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে, শরীরের শক্তির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমনকি শরীরের ক্ষত নিরসনেও কাজ করে।

২০১৮ সালে বেশকিছু গবেষণার পর্যালোচনা করে জানা যায়, জিনসেং ক্লান্তি বা অবসাদ নিরাময় করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, জিনসেংয়ের ভেতর জিনসেনোসাইডস নামক পদার্থ রক্তে সুগার লেভেলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে।

আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ক্যাকটাস!

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাসসহ অ্যালঝেইমার বা স্মৃতিভংশ রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। একজন পাচক এবং রেজিস্ট্রার্ড ডায়েটিশিয়ানের অ্যাবি জেলম্যানের দাবি ছিল বিষয়টি। তবে, মস্তিষ্কের উন্নতিতে জিসেংয়ের প্রভাবের বিষয়টি সম্ভাবনাময় হলেও সুনিশ্চিত নয়, বলেছেন অন্যান্য গবেষকরা।

সব গবেষকরা এই শিকড়টির সেবনের ব্যাপারে একমত পোষণ করলেও একই সঙ্গে চিকিৎসা বা শারীরিক কোনো কারণে জিনসেং সেবন করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলেও সতর্ক করেছেন।

Full Video