১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ৫ মিনিটে বিয়ে করলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। বর গাজীপুরের রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সরকার রাকিব। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘ আট–নয় বছরের পরিচয়। তবে এই বিয়েকে কোনোভাবেই প্রেমের বিয়ে বলতে নারাজ এই অভিনেত্রী। নতুন সংসার, হানিমুন, শুটিং—সব বিষয়ে তিনি মন খুলে কথা বললেন।
১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ৫ মিনিটে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কামরুজ্জামান সরকার ও মাহিয়া মাহি। বিয়ের পর গতকাল ভোরে রাজশাহীতে গেছেন নবদম্পতি।নতুন জীবন শুরু করলেন, শুভকামনা।ধন্যবাদ। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন সুখী হতে পারি। আপনাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না, কোথায় আছেন?
পরিবার, আত্মীয়স্বজন—সবকিছু মিলিয়ে একটু ব্যস্ত আছি। আমরা রাজশাহীতে আছি। বিয়ে কি রাজশাহীতে হয়েছে? না না, বিয়ে ঢাকায় হয়েছে। ভোরে আমরা রাজশাহীতে এসেছি।
কামরুজ্জামান সরকার ও মাহিয়া মাহি
আপনাদের পরিচয় কীভাবে?
আমাদের প্রথম পরিচয় আমার স্কুলের এক বান্ধবীর হাসবেন্ডের মাধ্যমে, একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে। তা আট–নয় বছর হবে। পরিচয়ের পর থেকেই আমরা বন্ধু। কিন্তু সেভাবে কথা হতো না। বন্ধুদের বিয়ে, হঠাৎ বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে দেখা হতো, কথা হতো। এভাবেই চলছিল। রিসেন্ট একটি গেট টুগেদারে আমাদের আবার দেখা হয়। তখন থেকেই কিছুটা নিয়মিত কথা বলা হতো।
১৩ তারিখেই চমক দিলেন। কেন মনে হলো, এই দিনেই বিয়ে করবেন?
দিনটি ছিল ওর (রাকিবের) জন্মদিন। আমার তরফ থেকে বিয়ে তার জন্য বার্থডে গিফট। বিয়ের সিদ্ধান্তের পরেই আমার মনে হয়েছিল, এই দিনেই বিয়ে করব। আরেকটা কথা, এই পরিকল্পনা আসলে আমাদের নয়। ওর সঙ্গে তো আমার প্রেম ছিল না। বন্ধু হিসেবে একটু ঘুরতাম। এই নিয়ে এত নিউজ হয়েছে, চারদিকে এত গুজব ছড়াচ্ছিল, সেই নিউজ দেখেই কথা বলতে বলতে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, চলো, বিয়ে করি। আমিও একা ছিলাম, সে–ও একা ছিল। আমাদের মধ্যে অনেক মতের মিল ছিল। তখন ওর তরফ থেকেও বিয়েতে রাজি হয়।
মাহিয়া মাহি
তাহলে গুজব আর নিউজের কারণেই আপনাদের প্রেম?
আমি বারবার পরিষ্কার করতে চাই, কোনোভাবেই এটা প্রেম–ভালোবাসার বিয়ে না, আবার অ্যারেঞ্জও না। দুজনের দুই দিক থেকে মনে হয়েছে, একসঙ্গে থাকা যায়। আমি তো সারা জীবন নায়িকা থাকব না। ঘরসংসার তো করতেই হবে। সেদিন থেকেই মনে হয়েছে, সে–ই সেরা।
কেন মনে হয়েছিল, তাঁকে নিয়ে ঘরসংসার করা যায়?
একটা মানুষ দুপুর ১২টা, কখনো বেলা ২টায় ঘুম থেকে উঠত। আমি পছন্দ করি বলে সে সকাল ৭টায় ঘুম থেকে ওঠে। সে আমাকে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দেয়। আমাকে কেয়ার করে। প্রতিদিন আমাকে ফুল দেয়। এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। মনে হয়েছে, মানুষটাকে নিয়ে সংসার করা যায়।
বিয়ের আসরে মাহিয়া মাহি
ফেসবুকে পোস্টের ফুলগুলো কি তাঁরই উপহার?
সব নয়। অনেক আগে থেকে ফেসবুকে নিয়মিত আমি ফুলের ছবি দিতাম। ফুল আমার অনেক পছন্দ। আমার আর অপুর (মাহির সাবেক স্বামী পারভেজ মাহমুদ অপু) সম্পর্কটা অনেক সুন্দর ছিল। আমরা ফেসবুকে এত ছবি দিতাম, মনে হয় নজর লেগে গিয়েছিল। এ জন্য এবার আমাদের তেমন কোনো ছবি ফেসবুকে শেয়ার করব না, যাতে আবার নজরে লাগে। এ জন্য ওর দেওয়া সব ছবি ফেসবুকে দিই নাই।
বিয়ে তো সুন্দর একটি শুরু, সেটা নিয়ে এত লুকোছাপার কারণ কী?
কোথায় লুকোছাপা? ১২টা ৫ মিনিটে বিয়ে করলাম, ২৩ মিনিট পরে ফেসবুকে ছবি দিলাম। এখন যদি এমন হতো, আমি বললাম এখন আমার বিয়ে, পরে দেখা গেল, বিয়ে হলো না। শুধু শুধু বলে লাভ আছে।
মাহিয়া মাহি
বিয়ে আপনার একক সিদ্ধান্তে হয়েছে?
পরিবারের সম্মতি ছিল না। পরে পরিবারকে রাজি করিয়েছি। আমাদের দুজনের এটা দ্বিতীয় বিয়ে। দ্বিতীয় বিয়েতে অ্যাপ্রিসিয়েশন তেমন একটা থাকে না, এটাই স্বাভাবিক।আপনাদের বিয়ের খবরে কেউ খুশি, কেউ বাঁকা চোখে দেখছে, আপনার মন্তব্য কী?
বয়েই গেল। আমরা ভালো আছি, ভালো থাকতে চাই—এটাই সবচেয়ে বড় কথা। কারণ, সবাইকে খুশি রেখে আমি মন খারাপ করে বাসায় বসে থাকব, এটাতে আমি একমত না। আমি ভালো থাকতে চাই, তাতে কে খুশি, কে মন খারাপ করল, এটা দেখার প্রয়োজন মনে করি না।
বেনারসি শাড়িতে মাহি
হানিমুনে যাচ্ছেন কবে?
এই মুহূর্তে হানিমুনে যেতে পারছি না। আমার টানা শুটিং। ১৭ তারিখ থেকে নরসুন্দর সিনেমার শুটিং। আবার বুবুজান সিনেমার লাস্ট শুটিং হবে। এখন আমি কাজটাই মনোযোগ দিয়ে করতে চাই। কাজটা আগে, পরে ঘুরতে পারব।আপনার স্বামী তো রাজনীতি করেন, আপনার ভবিষ্যতে রাজনীতি করার ইচ্ছে আছে?আমি কেন রাজনীতি করব। সে–ই করবে।
রাজশাহী থেকে ফিরে কোথায় থাকবেন—নিজের বাড়ি, নাকি শ্বশুরবাড়ি?মাত্র বিয়ে করেছি। এখনো আমার বাসা হয় নাই। ঢাকায় ফিরি। আমরা একসঙ্গেই থাকব। আগে ঢাকায় যাই।
মাহিয়া মাহি
বিয়েতে সহকর্মী বা মিডিয়ার কেউ ছিলেন?
না। কেউই ছিলেন না। দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষ ছিলেন।
আপনি তো এখন মা–ও বটে?
হ্যাঁ, আমার দুইটা বেবি আছে। ওর আগের পক্ষের সন্তান। তাদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ হয়নি। দেখা যাক, তারা খালা, নাকি আন্টি ডাকে।