স্কুল-কলেজ খুলছে, পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের কী হবে?

করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে স্কুল-কলেজ। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিলেও শুরুতে একসঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস হবে না। ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস হবে। প্রথমে হয়তো চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী যারা এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থী- তারা প্রতিদিনই ক্লাস করবে। আগামী নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছরও ক্লাসে পাঠদান হয়নি। তাই বিপাকে রয়েছেন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। তবে পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরীক্ষার্থীকে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু করে গত ১৮ জুলাই থেকে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকেই এই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।

অ্যাসাইনমেন্ট যে নেওয়া হচ্ছে, সেটার কী হবে? এ বিষয়ে আজ শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছিল এবং যে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নকল করে নাকি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের মাধ্যমে করেছে, সেগুলো ভালো করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।

ডিজি আরও বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয় ক্লাস শুরু করার আগে যা যা করণীয় সে বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করার জন্য আগেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কাজেই আমরা আশা করি, বিদ্যালয় খুলে দিলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

অ্যাসাইনমেন্ট বিষয়ে গত ১৫ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, অ্যাসাইনমেন্ট ঠিকঠাকভাবে করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হবে। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি আর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সব বিষয়ের ফল দেওয়া হবে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’-এর মাধ্যমে। আর পরীক্ষা নেওয়া গেলে নৈর্বাচনিক বাদে বাকি সব বিষয়ে গ্রেড দেওয়া হবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা আশা করছেন ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হবে।

গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেই রাতে শিক্ষামন্ত্রী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসার ইঙ্গিত দেন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। পরে কয়েক দফা চেষ্টা করেও এই মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে।

চলমান এই ছুটি আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে আজ (২৬ আগস্ট)। সে অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছুটি অব্যাহত থাকবে।

Full Video