পুলিশ থামতে বলায় চলন্ত গাড়ি থেকে নদীতে লাফ, পরে উদ্ধার

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে থামতে বলায় চলন্ত গাড়ি থেকে নদীতে লাফ দেন কলম শেখ (ডানে)। প্রায় সোয়া দুই ঘন্টা পর তাঁকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছেছবি: প্রথম আলো
মাদকদ্রব্য পাচারের খবর পেয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে তল্লাশিচৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় পুলিশ সন্দেহভাজন একটি মাহিন্দ্রকে থামতে বলে। মাহিন্দ্র থামার আগেই এক যাত্রী লাফ দিয়ে প্রথমে মহাসড়কে পড়েন। এরপর তিনি নদীতে লাফ দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের পদ্মার মোড়ে মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ নদীতে ওই ব্যক্তির খোঁজ করতে শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর কচুরিপানার ভেতর থেকে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন।

ওই ব্যক্তির নাম কলম শেখ (৪৫)। তিনি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার আইজদ্দিন মাতুব্বর ডাঙ্গীর মালেক শেখের ছেলে। বর্তমানে তিনি পুলিশি পাহারায় গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানায়, থামার সংকেত দিলে কলম শেখ চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দেন। এতে তাঁর হাত–পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। তবে দ্রুত উঠে তিনি সড়কের পূর্ব পাশে পদ্মা নদীতে লাফ দেন। কিন্তু কচুরিপানায় ভরপুর থাকায় ওই ব্যক্তিকে সহজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার আরও দুটি দল এবং ফায়ার সার্ভিস এসে সম্মিলিতভাবে কলম শেখের খোঁজ করতে থাকে।

পরে নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় কলম শেখকে বারবার ওপরে উঠে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর মহাসড়ক থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে কচুরিপানা নড়াচড়া করতে দেখেন নৌকায় থাকা পুলিশ সদস্যরা। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে না, এমন আশ্বাস পেয়ে তিনি মাথা উঁচু করলে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য তাঁকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলম শেখ বলেন, ‘আমার একটা অসুস্থ মেয়ে আছে। আমি গ্রেপ্তার হলে ওকে দেখবে কে—এই ভয়ে আমি লাফ দিয়েছি। জেলে গেলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে না, এ কথা শুনেই ধরা দিয়েছি।’

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ওই ব্যক্তি এভাবে আর কিছু সময় লুকিয়ে থাকলে হয়তো মারা যেতেন। চিকিৎসা শেষে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি গাঁজা বহনের কথা স্বীকার করেছেন।

Full Video