জলবায়ু পরিবর্তনের ‘অতি উচ্চ ঝুঁকি’তে বাংলাদেশের শিশুরা

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশের শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে অতি উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে ইউনিসেফের নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের শিকার হওয়ার অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার আরও তিনটি দেশ- আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান রয়েছে। এই চারটি দেশের শিশুদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা হুমকির মধ্যে রয়েছে।

‘জলবায়ু সঙ্কট কার্যত শিশু অধিকারের সঙ্কট’ শীর্ষ এ প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) প্রবর্তন করেছে ইউনিসেফ। এতে শিশুদের ঘূর্ণিঝড় ও দাবদাহের মতো জলবায়ু ও পরিবেশগত প্রভাবের মুখে পড়ার পাশাপাশি তাদের জরুরি পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ কতটা ঝুঁকিতে রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনে দেশগুলোকে ক্রমানুসারে স্থান দেয়া হয়েছে।

এই তালিকায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভারতের অবস্থান যথাক্রমে ১৪, ১৫, ১৫ ও ২৬ নম্বরে। নেপালের অবস্থান ৫১, শ্রীলঙ্কা আছে ৬১তম স্থানে। ভুটান আছে ১১১তম অবস্থানে, যেখানে শিশুরা অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিতে আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি শিশু অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ৩৩টি দেশে বসবাস করে। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক জর্জ লারিয়া-আদজেই বলেন, প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার লাখো শিশুর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের স্পষ্ট প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এই অঞ্চলে খরা, বন্যা, বায়ুদূষণ ও নদীভাঙনের কারণে লাখো শিশু গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত, স্বাস্থ্যসেবা ও পানিবিহীন অবস্থায় রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ মহামারি মিলে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের জন্য একটি উদ্বেগজনক সঙ্কট তৈরি করেছে। এখনই পদক্ষেপ গ্রহণের সময়। আমরা যদি পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় বিনিয়োগ করি, তাহলে পরিবর্তনশীল জলবায়ু এবং ক্রমশ খারাপের দিকে যাওয়া পরিবেশের প্রভাব থেকে তাদের ভবিষ্যৎকে আমরা রক্ষা করতে পারি।

জলবায়ু পরিবর্তনের এই সঙ্কট থেকে সুরক্ষা দিতে শিশুদের জন্য মূল পরিষেবাগুলোতে জলবায়ু অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার পেছনে বিনিয়োগ বাড়ানো; গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো; শিশুদের জলবায়ু বিষয়ক শিক্ষা এবং পরিবেশবান্ধব দক্ষতা শেখানো; কপ২৬-সহ সব জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনা এবং সিদ্ধান্তে তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করা; এবং কোভিড-১৯ মহামারি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া যাতে পরিবেশবান্ধব, স্বল্প কার্বন নির্ভর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় তা নিশ্চিত করতে সরকার, ব্যবসা খাত ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

Full Video