বড়খাল গ্রামটি কি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে?

বিধবা মালেকজানের (৭৫ )একমাত্র সম্বল ভিটেমাটি টুকু কেড়ে নিয়েছে আগ্রাসী যমুনা নদী। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর ছোট ঝুপড়ি ঘর তুলে জীবন পার করছেন। নেই কোন পেশাব-পায়খানা করার মত যায়গা। দশজনের দেওয়া অনুগ্রহ আর দান খয়রাতে চলে তার সংসার। বাড়ী ঘর নদীতে যাওয়ার পর ৫ সন্তান যে যার মত বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছে। এখন তিনি একাকী নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের ৮ ওয়ার্ডের বড়খাল গ্রামের প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা যমুনার নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে । একটি গুচ্ছ গ্রাম, একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা, বড়খাল ঈদগাহ মাঠ, কেন্দ্রীয় কবরস্থান সহ ৬ শত ঘরবাড়ীসহ ১৫০ একর জমি এরই মধ্যে নদী গর্ভে চলে গেছে।

২ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের নব নির্মিত ৩ তলা দৃষ্টি নন্দন ভবনসহ হলকার চর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদটি যমুনা নদী থেকে মাত্র ৬০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। যেভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে এখনি প্রতিরোধ ব্যাবস্থা না নিলে আগামী কয়েক দিনের ভেতর কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবনসহ পুরো স্কুলটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন কম্পানি কমান্ডার এডভোকেট খাইরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, যমুনার নদী ভাঙনে এই অঞ্চল পুরাটাই বিলীন হয়ে গেছে। বাকি যায়গাটুকু রক্ষা করার জন্য অনতিবিলম্বে সেখানে আপদকালীন জিও ব্যাগ ফেলা দরকার। আর স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দেওয়ার জন্য আমি সাংসদ আবুল কালাম আজাদের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান হোসেন বলেন, আমি সেখানে ভিজিট করতে যাব এই বিষয়ে এমপি মহোদয়কে অবগত করেছি এবং নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পাউবির নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জোর দাবী জানিয়েছি।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রসিদ জানিয়েছেন, আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশাকরি খুব দ্রুত আপদকালীন জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট দেলোয়ার হোসেনের জন্মস্থানের স্মৃতি চিহ্নটুকু রক্ষা করার জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Full Video