যে কারণে কাবুলে হঠাৎ বোরকার দাম আকাশ চুম্বি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নিয়েছে তালেবান। ফলে পুরো আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এরপর থেকেই সেখানকার সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। কী হতে যাচ্ছে তা নিয়েই যেন আতঙ্ক কাটছে না।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই কাবুলে নারীদের মধ্যে বোরকা কেনার হিড়িক পড়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

কাবুলের ব্যবসায়ী আরেফ। প্রথম নজরেই তাঁর দোকানে সারি সারি নীল বোরকা সাজিয়ে রাখতে দেখা গেল। বোরকা বিক্রি এতটা বেড়ে গেছে যে ঝুলিয়ে রাখা বোরকাগুলো দেখে যে কারও মনে হবে সেখানে ভারি পর্দা ঝুলছে। তালেবান কাবুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাবুলের ভেতরে থাকা নারীরা বোরকা কিনতে মার্কেট গুলোতে ভিড় করতে শুরু করেন।

আরেফ বলেন, আগে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে নারীরা এখানে বোরকা কিনতে আসতেন। কিন্তু এখন শহরের নারীরাও বোরকা কিনতে শুরু করেছেন।

নারীদের মধ্যে বোরকা কেনার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই দামও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বোরকা কিনতে আসা এক নারী বলেন, ‘গত বছরই এ বোরকার দাম ছিল ২০০ আফগান মুদ্রা। কিন্তু একই বোরকা তারা এখন আমাদের কাছে দুই হাজার থেকে তিন হাজার আফগান মুদ্রায় বিক্রি করার চেষ্টা করছে।’

কয়েক দশক ধরে আফগান নারীরা নীল রঙের বোরকা দিয়েই বিশ্বে পরিচিত। কিছুটা ভারি কাপড়ে তৈরি এ বোরকা মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে। এ ধরনের বোরকার চোখের সামনে থাকে নেটের কাপড়। এতে যে নারী বোরকা পরেন তিনি বাইরের সবকিছু দেখতে পেলেও কেউ তাকে দেখতে পায় না।

মূলত তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই নারীরা সতর্ক হয়ে গেছেন। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালেবানের শাসনে ছিল। সে সময় নারীদের বোরকা পরা ছিল বাধ্যতামূলক। কোনো নারী এ নিয়মের বাইরে গেলে তাকে শাস্তি পেতে হতো।

২০০১ সালে মার্কিন অভিযানে তালেবানের পতনের পর আর বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল না। এই সময়ের মধ্যে নারীরা বোরকা ছাড়া অন্য পোশাকও পরার সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি গত কয়েক বছরে বহু আফগান নারীকে বিভিন্ন আধুনিক পোশাকেও দেখা গেছে।

Full Video