যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে মেডিক্যাল বর্জ্য, বিপজ্জনক দূষণের শঙ্কা

বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা যান রোগ থেকে রক্ষা পেতে অথচ তাদের বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন আরো বেড়ে যাচ্ছে রোগ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সৃষ্ট মেডিক্যাল বর্জ্য যত্রতত্র ফেলাই এর অন্যতম কারণ। এর জন্য নেই কর্তৃপক্ষের কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা।৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই বর্জ্যের কারণে পরিবেশের উপাদান মাটি, পানি এবং বায়ু বিপজ্জনক ভাবে দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ২০০৮ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালা করা হলেও তা কার্যকর নয়। সে বিধিমালায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্জ্য সংরক্ষণ এবং তা পুড়িয়ে নষ্ট করার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের ওর্য়াডে কিংবা জরুরি বিভাগে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণের ন্যূনতম কোনো আয়োজন নেই। নীচতলায় জরুরি বিভাগের কক্ষে একটি লাল ঝুড়ি ছাড়া আর কোথাও বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা দেখা যায়নি। অথচ আলাদা ঢাকনাযুক্ত পাত্রে চিকিৎসা বর্জ্য সংরক্ষন করার বিধান রয়েছে। উন্মুক্ত ঝুড়ির ভেতর বর্জ্য ফেলা হলেও ব্যবহৃত সুচগুলোকে সিরিঞ্জ থেকে আলাদা করা হয়নি।

প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বর্হিবিভাগের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন ধরনের ময়লা আবর্জনার সাথে চিকিৎসা বর্জ্য স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এসব চিকিৎসা বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্জ্যের তালিকায় রয়েছে ব্যবহৃত সুচ, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, মাক্স, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, টিউমার, ওষুধের শিশি, রক্তের ব্যাগ, ওষুধ, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে দীর্ঘদিন ধরে যত্রতত্রভাবে ফেলে রাখা বর্জ্যের ভাগাড়ে কুকুরের উপদ্রুপের কারণে চারদিকে প্রকট হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধযুক্ত সেই বর্জ্যরে স্তুপের পাশ দিয়েই নাকে-মুখে রুমাল চেপে যাতায়াত করছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীদের আত্মীয়স্বজনরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, হাসপাতালের চিকিৎসা-বর্জ্য সাধারণ গৃহস্থালি বর্জ্যের চেয়েও ক্ষতিকর। সিরিঞ্জ ও স্যালাইনের ব্যাগ হেপাটাইটিস বি ও সিসহ কিছু রোগের জীবাণু ছড়ায়। রক্ত, মূত্রসহ বিভিন্ন তরল বর্জ্য নর্দমায় ফেলে দিলেই তা দূষণমুক্ত হয়ে যায় না। নর্দমার ভেজা, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে টাইফয়েড ও আমাশয়ের মতো পানিবাহিত রোগের জীবাণু বহুদিন বেঁচে থাকে। অথচ কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়টি তেমন গুরুত্বই পাচ্ছে না।

ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাসানুল হাছিব বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Full Video